তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার

 কৃষি ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

 তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির  আমাদের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তথ্যের আদান-প্রদান সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এমন এক অসাধারণ সুযোগ।

ইমেজ ঃ১

 তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্বের জ্ঞান ও তথ্য ভান্ডার এর প্রবেশের সীমান্ত সম্ভাবনা দরজা খুলে দিয়েছে সৃষ্টি করেছে যার অনুপস্থিতি স্বাচ্ছন্দ্যময় আধুনিক জীবন চিন্তাই করা যায় না।

পেজ সূচীপত্রঃ

নিচে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ১০ টি ব্যবহার দেওয়া হলোঃ-

 ব্যবসা-বাণিজ্য তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যাপক ব্যবহার ব্যতীত আধুনিক ব্যবসা ও আমদানি রপ্তানিতে উন্নয়ন সম্ভব নয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ছাড়া আজকাল ব্যাংক, কোম্পানি,পরিবহন এবং উন্নত বিশ্বের সাধারণ কেনাকাটা সহ অনেক কর্মকাণ্ড  অচল। ব্যবসা-বাণিজ্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সহজে কম সময়ে সংবাদ আদান-প্রদান ও যোগাযোগ, ই্মেল , ওয়েবসাইট , এবং ইন্টারনেট বাণিজ্যিক সহ সব রকম যোগাযোগের আধুনিক মাধ্যম।

  • ব্যবসা-বাণিজ্য তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
  • শিক্ষা ক্ষেত্রে যোগাযোগ প্রযুক্তি
  • অফিস- আদালতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
  •  বিজ্ঞান চিকিৎসায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
  •  শিল্প সাহিত্যে এবং বিনোদনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
  • কৃষি ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
  • মহাকাশ অভিযানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
  • যোগাযোগ ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
  • গবেষণা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ সহ সব রকম যোগাযোগের আধুনিক মাধ্যম।

বিশ্বের প্রায় সকল দেশের মধ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন কে ই-কমার্স বলে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিক্রয়ের বিষয়টি সকলের দৃষ্টি সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছে। এর মাধ্যমে শুধু যে পণ্য ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে তা নয়, বিভিন্ন ধরনের সেবা ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া যায়। ই ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আমরা ব্যাংকে না গিয়ে নির্দিষ্ট হিসেবে টাকা স্থানান্তর করতে পারি।

বেশিরভাগ ব্যাংক ই এখন এটিএম বুথের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন ও জমাদানের সুবিধা দিচ্ছে। এর ফলে অতি সহজে কম খরচে এবং কম সময় টাকা উত্তোলন ও জমা দেওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কী ?

 শিক্ষা ক্ষেত্রে যোগাযোগ প্রযুক্তি

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো।এখন ইচ্ছা করলে কেউ বাংলাদেশে বসে আমেরিকার কোন লাইব্রেরী থেকে বই পড়তে পারেন। আজকাল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী কিংবা গবেষণা কর্ম সাথে সাথে ইন্টারনেটে প্রকাশ করা যাচ্ছে। হলে পৃথিবীর যেকোনো দেশের মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারছে। আজকাল শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দেয়ার জন্য কম্পিউটার এবং প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেক শ্রেণীর উপযোগী করে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করা হয়।

যুক্ত করা হয় সুন্দর আকর্ষণের চিত্র এবং বর্ণনা। এর ফলে শিক্ষার্থীরা সহজে পাঠের বিষয়বস্তু বুঝতে এবং আয়ত্ব করতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে না বুঝে বই দেখে শুধু মুখস্ত করার দিন শেষ হয়ে গেছে। তাছাড়া শিক্ষকরা ক্লাস শুরুর আগেই লেকচার সেট অনলাইনে ছাত্র ছাত্রীদের দিয়ে দিতে পারেন। এরপরে শিক্ষার্থীরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে পারে। বিভিন্ন দেশের পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা করে সময়োপযোগী এবং উন্নত মানের পাঠ্যক্রম তৈরি করতে পারে। জ্ঞান অর্জন এখন শুধু শ্রেণীকক্ষ শিক্ষকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

বর্তমানে ডিস্টেন্স লার্নিং এর সাহায্যে ঘরে বসে পড়া এমন কি ডিগ্রী নেওয়া সম্ভব। শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিপ্লব এনেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বর্তমানে মাল্টিমিডিয়া সিডি ও ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো বিষয়ে সম্বন্ধে ছাত্রছাত্রীরা জানতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকরা ছাত্রদের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের নাম ও ঠিকানা দিয়ে দেন , এর ফলে তাদের বিশ্লেষণের দক্ষতা ও সমস্যা সমাধানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের অভ্যাস বৃদ্ধি পায় যা বর্তমান বিশ্বের জ্ঞানের প্রধান ভান্ডার হিসেবে বিবেচিত।

বিভিন্ন পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। প্রশ্ন উত্তর এর মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষার মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষার( যেমন এসএসসি ও এইচএসসি )খাতা মূল্যায়ন করে এবং ফলাফল প্রদান করে থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

 অফিস- আদালতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

অফিস আদালতের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। অফিসে যেখানে আগে প্রচুর পরিমাণে কাগজপত্র স্তুপ দেয়া থাকতো আছে কিনা কাগজপত্র দেখা যায় না বললেই  চলে। এসব ফাইলের পরিবর্তে রয়েছে এক একটি কম্পিউটার এবং একটি ইন্টারনেট সংযোগ। বিচারক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারেন। বিচার প্রার্থীরা অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি এবং করতে পারেন। সাধারণ জনগণ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের প্রচলিত আইন সম্পর্কে জানতে পারবে। ফলে তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সকল আইনকে বিনামূল্যে জনগণের জন্য অনলাইনে প্রকাশ করতে পারে। 

বিচারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যানে সমন্বিত ভাবে করা সম্ভব।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রয়োগে আদালত তথা বিচার ব্যবস্থার সকল কার্যক্রম সমন্বিত ভাবে করাই হলো ইকোট। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ইকো ট চালু হয়েছে এবং সাফল্যজনকভাবে কাজ করছে।

 বিজ্ঞান চিকিৎসায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

পূর্বে কোন একজন বিজ্ঞানী কোন গবেষণা কার্য অসমাপ্ত রেখে মারা গেলে অথবা অন্য কোন কারণে চালিয়ে যেতে না পারলে , গবেষণা কাজটি সেখানে সমাপ্ত হয়ে যেত কোন ফলাফল ছাড়া। হয়তো পরবর্তী আবার কোন বিজ্ঞানী ও একই বিষয়ে উপর গবেষণা শুরু করেছেন। অথবা এমন দেখা যায় যে একই বিষয়ের উপর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে একযোগে প্যারালাল ভাবে গবেষণা করে, কারণ কর্ম নতুনভাবে প্রকাশিত চিকিৎসায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ হওয়ার ফলে টেলিফোন টেলিভিশন ইমেল ইন্টারনেট ইত্যাদি মাধ্যমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এবং গবেষণা কর্ম উত্তর সমৃদ্ধি লাভ করেছে।ফলে বিজ্ঞান সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে রকেটের গতিতে। বিজ্ঞান নিত্য নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের দ্বারে হাজির হচ্ছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ ঘরে বসে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণের চিকিৎসা সেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।

ইমেজঃ২



নতুন নতুন ঔষধের উদ্ভাবন এবং সর্বশেষ পদ্ধতি আজ সবাই জেনে যাচ্ছে। রোগীরা ঘরে বসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নত হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি কথা বলতে পারেন এবং পরামর্শ নিতে পারেন। বিভিন্ন প্যাথলজিক পরীক্ষার রিপোর্ট ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূর দেশ থাকা ডাক্তারকে দেখাতে পারেন। বর্তমানে আমাদের দেশেও টেলিমেডিসিন পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। এর ফলে দুর্গম এলাকা থেকেও জনগণ টেলিফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকে। 

 শিল্প সাহিত্যে এবং বিনোদনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

সারা বিশ্বের টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান আজ ঘরে বসে উপভোগ করা যায়। বিভিন্ন ধরনের থ্রিডি গেম এবং এনিমেটেড বিভিন্ন সিনেমা বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। ডিজিটাল প্রজেকশন এর ফলে দর্শক সিনেমা , নাটক ও ঐতিহাসিক বর্ণনা আনন্দের সাথে উপভোগ করতে পারেন। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যানে আজ শিল্পী সাহিত্যের ব্যাপক প্রসার হচ্ছে এবং প্রকাশনার ক্ষেত্রে যুক্ত হচ্ছে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি।

সাহিত্য ও শিল্পকর্মের ফলাফল আজ মুহূর্তে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এবং অবদান রেখে যাচ্ছে। বিনোদনের কথা তো বলাই বাহুল্য। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে সারা বিশ্ব আজ আমাদের হাতের মুঠোয়। ফলে তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের বিনোদনের সকল চাহিদাকে পূরণ করে যাচ্ছে।

 কৃষি ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

আমাদের কৃষ দেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের আশি পার্সেন্ট লোক কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কৃষি শিল্পের উন্নতির সাথে সারা দেশের উন্নতি নির্ভর করে। আর এই কৃষির উন্নয়নের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। আজকাল জমির মাটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মাটির বিভিন্ন উপাদানের , কোন মাটিতে কোন ফসল উৎপাদন হবে তথ্যপ্রযুক্তির বদলাতে বিভিন্ন ফসলের উপাদান রোগ বলায় আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য কার্যকরী ঔষধ, প্যাকেজিং , ব্যবস্থা বাজারজাতকরণ ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে পেয়ে থাকে। অনলাইন কৃষি বাজারও চালু হয়েছে যার ফলে কৃষকরা সহজে বেশি দামে কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে পারে। কৃষকরা গ্রামে থেকে মুহূর্তের মধ্যে বড় বড় শহরে পাইকারি বাজারের দাম জানতে পারে।

ফলে কম দামে ফসল বিক্রি করে লোকসান দিতে হয় না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন গবেষণা ও প্রয়োগের ফলে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে উন্নত  , অধিক ফলনশীল , প্রতিকূল পরিবেশে সহনশীল খাদ্যশস্য আবিস্কার করছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।

মহাকাশ অভিযানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

21 শতকে মহাকাশ অভিযান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া অসম্ভব। চাঁদের অবতরণ মহাকাশ স্টেশন স্থাপন , অন্যান্য গ্রহে অভিযান এবং পৃথিবীর উপর লেখাপড়া করার জন্য ডেটা প্রক্রিয়াকরণ , স্থানান্তর , সংরক্ষণ এবং বন্টন ইত্যাদিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। মহাকাশ অভিযানে সবচেয়ে বড় বিষয় হল অভিযান অংশগ্রহণকারী সকল যন্ত্রপাতি বা যন্ত্রাংশ সঠিক সময় সঠিকভাবে কাজ করা।

কোন কারণে কোন একটি অংশ বিকল হলে বা কাজ না করলে সম্পূর্ণ অভিযান বাতিল হয়ে যায়। এতে প্রচুর সময় এবং অর্থের অপচয় হয়। বর্তমানে মহাকাশ কেন্দ্রে পাঁচটি সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেকটি কম্পিউটার বিভিন্ন অংশের সাথে যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে সহজ এবং জটিল কাজগুলো সম্পন্ন করে। জটিল কাজ করার জন্য চারটি কম্পিউটার প্রয়োজন হয় এবং পঞ্চমটি কম্পিউটার হার্ডওয়ার সমস্যা সমাধানের জন্য রাখা হয় অতিরিক্ত হিসেবে।

নাসা সেন্সর ওয়েভ সিস্টেমের কথা চিন্তা করছে। এর ফলে বিশাল আকারের স্যাটেলাইটের পরিবর্তে  অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের স্যাটেলাইট তৈরি। প্রেরণ করা হবে নির্দিষ্ট টার্গেট করে। এরা প্রয়োজনে অবস্থান পরিবর্তন করতে পারবে এবং পরবর্তী তো নির্দিষ্ট এরিয়া কভার করতে পারবে। স্যাটেলাইটের কম্পিউটারগুলো সুপার কম্পিউটার দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হবে। টছোট ছোট স্যাটেলাইট গুলোকে পৃথিবী থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। স্যাটেলাইটের কোন অ্যাক্টিভ অংশ বিকল হলে বা কার্যক্ষমতা কমে গেলে সম্পূর্ণ স্যাটেলাইট ধ্বংস না করে ওই নির্দিষ্ট অংশ পরিবর্তন করা বা আপডেট করা সম্ভব হবে। এই পদ্ধতিতে মহাকাশ অভিযান অনেক কমবে। মহাকাশ অভিযান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে হাতে হাত রেখে সকল সমস্যা সমাধান করে পৃথিবী জুড়ে উন্নয়ন বয়ে আনবে।

আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার

 যোগাযোগ ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার যোগাযোগ ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন সাধন করেছে। বর্তমানে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম গুলো হল মোবাইল , রেডিও , টেলি কনফারেন্সিং , টেলিভিশন , ভিডিও কনফারেন্সিং , ইত্যাদি। আগে মানুষের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠিপত্র। ডাক বিভাগের উপর আমাদের নির্ভর করতে হতো। তখন একটি চিঠি পাঠাতে দেশের অভ্যন্তরে তিন থেকে চারদিন এবং দেশের বাইরে চিঠি পাঠানোর ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১০ দিন তার চেয়েও বেশি সময় লাগতো। 

বিদেশে চিঠি পাঠানোর সময় নির্ভর করতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কাগজ , কলম ব্যবহার করে চিঠি লেখা অনেকে ভুলে গেছে। ডাক বিভাগ অনেকটা অলস ভাবে সময় কাটাচ্ছে। এখন তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে ব্যবহৃত হচ্ছে ই-মেল । ইমেইলের মাধ্যমে আমরা খুব সহজে অল্প খরচ অতি দ্রুত যেকোনো সংবাদ একই স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রেরণ করতে পারি । এছাড়া দেশ বা বিদেশে উভয় ক্ষেত্রে সমান সময় লাগে। অপেক্ষা করতেও হয় না কোন ফ্লাইট সিডিউল এর জন্য।

এক্ষেত্রে সময় এবং খরচ আছে এবং পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ , এর জন্য দরকার শুধু একটি ইন্টারনেট সংযোগ। তাছাড়া মোবাইল টেকনোলজির ফলে আমরা খুব সহজে , অল্প খরচে সরাসরি কারো সাথে কথা বলতে পারি। ভিডিও কনফারেন্স এর সাহায্যে আমরা যার সাথে কথা বলি তাকে সরাসরি দেখতে পারি । তাছাড়া রেডিও বা টেলিভিশনের মাধ্যমে যেকোনো সংবাদ সহজে দেশ এবং বিশ্বের সকল মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়া যায়। 

তাছাড়া যোগাযোগ ক্ষেত্রে আইসিটির একটি বড় ব্যবহার হল বিভিন্ন যানবাহন যেমন-রেল, বিমান ইত্যাদি টিকিট রিজার্ভেশন এর ফলে আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে রেলওয়ে এবং বিমানের টিকেট বুকিং করতে পারি। উপরে আলোচনা থেকে দেখা যায় যে আইসিটি যোগাযোগ ক্ষেত্রে গতি এনেছে এবং খরচ কমিয়েছে।  

 গবেষণা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

গবেষণা কাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিসীম। পূর্বে দেখা যেত, একই বিষয়ের উপরে একাধিক বিজ্ঞানী গবেষণা করছে. একজন অন্যজনের খবর জানতেন না অথবা কোন বিজ্ঞানী তার গবেষণা কার্য অসমাপ্ত রেখে মৃত্যুবরণ করেছে এক্ষেত্রে তিনি তার গবেষণার অগ্রগতি ফলাফল অন্যকে জানাতে পারতেন না। তিনি কোন রেকর্ড রাখতে পারতেন না অথবা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কেউ জানতো না। এ অবস্থায় ওই আংশিক গবেষণা কোন কাজে আসতো না ।

কিন্তু বর্তমান এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ফলে বিজ্ঞানীরা তাদের চিন্তাধারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে। পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ক গবেষণা শুরু করলে ইন্টারনেটের সাহায্যে সবাই অবগত হয়। গবেষণার প্রতিটি ধাপের ফলাফল সকলের নিকট ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে। এর ফলে একজনের গবেষণার ফলাফল কাজে লাগিয়ে অন্যজন গবেষণা চালিয়ে যেতে পারে। ফলে আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হয় না।

ইমেজঃ ৩




তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে গবেষণায় প্রাপ্ত উপাত্ত যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব এবং উপাত্ত গুলোকে প্রক্রিয়াকরণের সময় সূক্ষ্ম গাণিতিক হিসাব নিকাশ করার জন্য এবং যুক্তি মূলক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কম্পিউটার কিংবা আইসিটি ব্যবহার করা হয়। প্রাণীর ডিএনএ তথা জিন নিয়ে গবেষণার জন্য আইসিটি ব্যবহার করা হয়। মানবদেহের বিভিন্ন গবেষণায় ত্রিমাত্রিক এনিমেশন ব্যবহার করা হচ্ছে।

যুদ্ধক্ষেত্র এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে গবেষণায় ত্রিমাত্রিক চিত্র ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। বিভিন্ন প্রকার বিপদজনক পদার্থ তৈরিতে যা ব্যবহারের পূর্বে পরীক্ষা করা প্রয়োজন সেখানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে পরীক্ষা করা যায়, সঠিক পরিমাণ এবং সূক্ষ্ম হিসাব গবেষণায় সঠিক ফলাফল পেতে সাহায্য করে আর এ দুটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব শুধুমাত্র তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে।

 উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

বর্তমান সময় শিল্প কারখানা গুলো আগের তুলনায় কয়েক ধাপ এগিয়ে কেন বলতে পারেন? এই যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করছি এটা কিন্তু তারই ফল। একটি দেশের উন্নয়নে শিল্প যে বিশেষ ভূমিকা রাখে তা বলার অপেক্ষায় রাখে না। আর এই শিল্পে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে হচ্ছে।

সুতরাং আমাদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে শিল্প উৎপাদনকে আরো দক্ষ এবং লাভজনক করে তুলতে হবে। শিল্পপতিরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তাদের কারখানাগুলো পরিচালনা করছে, তাদের পণ্য উৎপাদন এবং বিপণন সহ যাবতীয় কাজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে কাজে লাগে সম্পন্ন করছে। এতে করে দেশ শিল্প খাতে এগিয়ে যাচ্ছে।

লেখক এর মন্তব্য     

 তাহলে আমরা বলতে পারি যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মাধ্যমে আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সরকার স্বাস্থ্যসেবা পরিবহন ইত্যাদি আরো উন্নত করতে পারি ছাড়াও আমাদের জ্ঞানকে প্রসারণ এবং বাড়াতে পারি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের জীবনের দৈনন্দিন কাজকর্ম অনেক সহজলভ্য হয় এবং উন্নত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজ কমসময়ে এবং সঠিক নিয়মে করতে পারে এতে আমাদের জীবনে উন্নতি সাধন হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রেন্ড এ টু জেড এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url